বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন
জামালপুর থেকে মোঃ ইমরান মাহমুদঃ— জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলায় মহামারী রুপ নেয়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করায় পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে না পারা শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে নিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বকশিগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা গ্রামের সরকারবাড়ীর বেশ ক’জন যুবক। যা ইতিমধ্যে সরকারবাড়ী অনন্য এক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে সবার দৃষ্টি কেড়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঝালকাঠিতে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি
জানা যায়, মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে পরিচিত মরহুম মৌলভী মঈন উদ্দিনের সুযোগ্য ছোট ছেলে কানাডা প্রবাসী ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ-কলম্বিয়া এর অধ্যাপক ড. মতিউল আলমের চিন্তা চেতনা এবং আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে না পারা শিক্ষার্থীদের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চালু করা হয়েছে পড়াশুনা কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়েছে শিক্ষাসামগ্রী। প্লে গ্রুপ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আটজন করে পনরটি গ্রুপে পাঠদান করা হচ্ছে। এ সমস্ত শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছায় পাঠদানে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক, ইউনিভার্সিটি ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ পাঠদান কার্যক্রম চলছে। যারা স্বেচ্ছায় পাঠদানে অংশ নিয়েছেন তারা হলেন, খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মোকাদ্দেছ রিপন, সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজের প্রভাষক মোঃ রবিউল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মামুন, নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জোবায়ের হাসান রিয়াদ, বিভিন্ন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী দিপালী, মুন্নি আকতার, মিরা বেগম, সাহিদা আকতার, নওশিন জাহান, ঈষিতা, ইস্রাফিল এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সেতারা বেগম ও সাজেদা বেগম।
আরও পড়ুনঃ সাটুরিয়া থানা পুলিশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির
এ ছাড়াও সরকারবাড়ী পক্ষ থেকে পাখিমারা গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে প্রতি সপ্তাহে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কাজ নিয়মিত রাখা হয়েছে। গত দেড় মাস থেকে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি নগদ অর্থও দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। করোনা ক্লান্তিকালীন সময়ে সরকারবাড়ীর সম্মিলিত সমন্বিত উদ্যোগ রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জান যায়। গত চার দফায় পাখিমারা গ্রামে জীবানুনাশক ওষুধ ছিটানো, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা, শ্রমজীবী, দুঃস্থ অসহায় মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরনসহ বেশকিছু অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবার জন্য নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কর্মহীন শ্রমজীবী দুঃস্থ মানুষ গুলোর কথা চিন্তা মাথায় রেখে এদের পাশে ইতিমধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন সরকারবাড়ীর অধ্যাপক মমতাজ বেগম, কানাডা প্রবাসী অধ্যাপক ড. মতিউল আলম এবং ড. মতিউল আলমের কনিষ্ট পুত্র ইঞ্জিনিয়ার ময়নুল আলম রিয়ান।
আরও পড়ুনঃ করোনা কালে মানবতার সেবায় “ভয়েস অব কাজিপুর”
পাখিমারা সরকারবাড়ীর সকল বিত্তবানদের নিকট থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে সমন্বয়ক হিসেবে মানবতার সেবায় কাজ করছেন সুমন সরকার ও রাসেল সরকার। তাদের এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে এ বাড়ীর বেশ কিছু যুবক। তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
পাখিমারা সরকারবাড়ীর রয়েছে একটি বিশাল সামাজিক শক্তি। করোনাক্লান্তিকালে এই শক্তি আরো দৃঢ়তর করতে ওই যুবকরা প্রস্তুত। তারা স্বেচ্ছায় দুঃস্থ ও দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলোর জন্য মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে এ করোনা ক্লান্তিকালে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply